প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে প্রযুক্তির মানবিক ব্যবহারের উপর সেমিনার অনুষ্ঠিত ।
সম্প্রতি প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ইউনিভার্সিটির ইইই বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় ‘টেক জার্নি: মাই লাইফ লং জার্নি ইন টেননোলজি ফর ম্যানকাইন্ড’ শীর্ষক একটি জীবনমুখী সেমিনার, যেখানে প্রযুক্তিকে মানবকল্যাণে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা ও দর্শন তুলে ধরেন দেশের অন্যতম খ্যাতনামা বিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অনারারি প্রফেসর ড. খন্দকার সিদ্দিক-ই-রাব্বানী। মূল প্রবন্ধে তিনি তাঁর জীবনের দীর্ঘ কর্মপথে উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি এবং তার ব্যবহারিক প্রয়োগের কথা তুলে ধরেন, যা বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে।
প্রফেসর রাব্বানী বলেন, প্রযুক্তির সাফল্য তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণের কাছে সহজলভ্য হয়ে ওঠে। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি প্রযুক্তিকে মানবিক ও ব্যবহারযোগ্য করে গড়ে তুলতে। তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর নেতৃত্বে উদ্ভাবিত সৌরভিত্তিক পানি পাস্তুরাইজেশন ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ পদ্ধতি বাংলাদেশের আর্সেনিক সমস্যায় আক্রান্ত অঞ্চলের জন্য নিরাপদ পানির উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও তিনি দেশে প্রথমবারের মতো কম্পিউটারভিত্তিক ইএমজি/ইপি ও নার্ভ কন্ডাকশন যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, যা নিউরো-ডায়াগনস্টিক প্রযুক্তিতে নতুন যুগের সূচনা করে। দেশের প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি পিইএমএফ যন্ত্র হাড় জোড়া ও ব্যথা নিরাময়ে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
তাঁর উদ্ভাবিত ডাইনামিক পেডোগ্রাফ প্রযুক্তি ডায়াবেটিক রোগীদের পায়ে ঘা ও গ্যাংগ্রিন প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং ফোকাস্ড ইমপিডেন্স মেথড (এফআইএম) প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে ফুসফুসের কার্যক্রম, গ্যাস্ট্রিক সমস্যার নির্ণয়, নবজাতকের শ্বাস-প্রশ্বাস পর্যবেক্ষণ এবং স্তন টিউমার শনাক্তকরণে। তদুপরি, ডিস্ট্রিবিউশন অব এফ- লেটেন্সি (ডিএফএল) বিশ্লেষণের মাধ্যমে মেরুদণ্ডের রোগ নির্ণয়ে তিনি একটি দ্রুত, নির্ভরযোগ্য এবং কম খরচের প্রযুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমি আমার উদ্ভাবিত কোনো প্রযুক্তির জন্য পেটেন্ট নিইনি। আমি বিশ্বাস করি, জ্ঞান ও প্রযুক্তি মানবতার সম্পদ। এটি কখনোই ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হওয়া উচিত নয়।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সহযোগী ডিন প্রফেসর ড. শাহীদ মোহাম্মদ আসিফ ইকবাল। তিনি বলেন, ড. রাব্বানীর মতো বিজ্ঞানীর জীবন ও কর্ম তরুণদের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণা। প্রযুক্তিকে কেবল একটি ক্যারিয়ার নয়, বরং সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করাই হবে প্রকৃত প্রকৌশলের সার্থকতা। তিনি আরও যোগ করেন, তরুণরা যেন ভবিষ্যতে প্রযুক্তিকে মানুষের মুখোমুখি এনে সহজ ও প্রাসঙ্গিক করে তোলে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের চেয়ারম্যান টুটন চন্দ্র মল্লিক। তিনি সেমিনার শেষে ড. রাব্বানীকে সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র প্রদান করেন। প্রভাষক রাহুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় পুরো আয়োজনটি ছিল প্রাণবন্ত ও শিক্ষণীয়। শিক্ষার্থীদের সরাসরি প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ এবং প্রফেসর রাব্বানীর সদাহাস্য উত্তর সেশনটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
সেমিনারে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক, গবেষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। আয়োজকগণ আশা প্রকাশ করেন, এমন আয়োজন ভবিষ্যতে প্রযুক্তি ও মানবিকতার সমন্বয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।
Related News
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বিএসসি ইন ইইই প্রোগ্রামের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত ।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির জিইসি মোড়স্থ ক্যাম্পাসে প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের উদ্যোগে মাসিক সাহিত্য সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৮ জুলাই ২০২৫, সোমবার, বিকেল ৩টায় ।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে ‘জুলাই স্মরণে: স্মৃৃতি ও সংগ্রামের গল্প’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে সিটি মেয়র ডাঃ শাহাদাত হোসেন জুলাই গণঅভ্যুত্থান আমাদের জাতীয় ইতিহাসের গৌরবগাথার এক সাহসী অধ্যায় ।
প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে প্রযুক্তির মানবিক ব্যবহারের উপর সেমিনার অনুষ্ঠিত ।
সম্প্রতি প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির কেন্দ্রীয় অডিটোরিয়ামে ইউনিভার্সিটির ইইই বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় ‘টেক জার্নি: মাই লাইফ লং জার্নি ইন টেননোলজি ফর ম্যানকাইন্ড’ শীর্ষক একটি জীবনমুখী সেমিনার, যেখানে প্রযুক্তিকে মানবকল্যাণে ব্যবহারের অভিজ্ঞতা ও দর্শন তুলে ধরেন দেশের অন্যতম খ্যাতনামা বিজ্ঞানী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োমেডিকেল ফিজিক্স অ্যান্ড টেকনোলজি বিভাগের অনারারি প্রফেসর ড. খন্দকার সিদ্দিক-ই-রাব্বানী। মূল প্রবন্ধে তিনি তাঁর জীবনের দীর্ঘ কর্মপথে উদ্ভাবিত বিভিন্ন প্রযুক্তি এবং তার ব্যবহারিক প্রয়োগের কথা তুলে ধরেন, যা বাংলাদেশসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রেখেছে।
প্রফেসর রাব্বানী বলেন, প্রযুক্তির সাফল্য তখনই অর্থবহ হয়, যখন তা দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগণের কাছে সহজলভ্য হয়ে ওঠে। আমি সবসময় চেষ্টা করেছি প্রযুক্তিকে মানবিক ও ব্যবহারযোগ্য করে গড়ে তুলতে। তিনি উল্লেখ করেন, তাঁর নেতৃত্বে উদ্ভাবিত সৌরভিত্তিক পানি পাস্তুরাইজেশন ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণ পদ্ধতি বাংলাদেশের আর্সেনিক সমস্যায় আক্রান্ত অঞ্চলের জন্য নিরাপদ পানির উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এছাড়াও তিনি দেশে প্রথমবারের মতো কম্পিউটারভিত্তিক ইএমজি/ইপি ও নার্ভ কন্ডাকশন যন্ত্র উদ্ভাবন করেন, যা নিউরো-ডায়াগনস্টিক প্রযুক্তিতে নতুন যুগের সূচনা করে। দেশের প্রেক্ষাপটে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি পিইএমএফ যন্ত্র হাড় জোড়া ও ব্যথা নিরাময়ে কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে।
তাঁর উদ্ভাবিত ডাইনামিক পেডোগ্রাফ প্রযুক্তি ডায়াবেটিক রোগীদের পায়ে ঘা ও গ্যাংগ্রিন প্রতিরোধে সহায়তা করে এবং ফোকাস্ড ইমপিডেন্স মেথড (এফআইএম) প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে ফুসফুসের কার্যক্রম, গ্যাস্ট্রিক সমস্যার নির্ণয়, নবজাতকের শ্বাস-প্রশ্বাস পর্যবেক্ষণ এবং স্তন টিউমার শনাক্তকরণে। তদুপরি, ডিস্ট্রিবিউশন অব এফ- লেটেন্সি (ডিএফএল) বিশ্লেষণের মাধ্যমে মেরুদণ্ডের রোগ নির্ণয়ে তিনি একটি দ্রুত, নির্ভরযোগ্য এবং কম খরচের প্রযুক্তি উপস্থাপন করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমি আমার উদ্ভাবিত কোনো প্রযুক্তির জন্য পেটেন্ট নিইনি। আমি বিশ্বাস করি, জ্ঞান ও প্রযুক্তি মানবতার সম্পদ। এটি কখনোই ব্যবসায়িক পণ্যে পরিণত হওয়া উচিত নয়।
সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির সহযোগী ডিন প্রফেসর ড. শাহীদ মোহাম্মদ আসিফ ইকবাল। তিনি বলেন, ড. রাব্বানীর মতো বিজ্ঞানীর জীবন ও কর্ম তরুণদের জন্য এক অনন্য অনুপ্রেরণা। প্রযুক্তিকে কেবল একটি ক্যারিয়ার নয়, বরং সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে গ্রহণ করাই হবে প্রকৃত প্রকৌশলের সার্থকতা। তিনি আরও যোগ করেন, তরুণরা যেন ভবিষ্যতে প্রযুক্তিকে মানুষের মুখোমুখি এনে সহজ ও প্রাসঙ্গিক করে তোলে, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।
সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের চেয়ারম্যান টুটন চন্দ্র মল্লিক। তিনি সেমিনার শেষে ড. রাব্বানীকে সম্মাননা স্মারক ও সনদপত্র প্রদান করেন। প্রভাষক রাহুল চৌধুরীর সঞ্চালনায় পুরো আয়োজনটি ছিল প্রাণবন্ত ও শিক্ষণীয়। শিক্ষার্থীদের সরাসরি প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশগ্রহণ এবং প্রফেসর রাব্বানীর সদাহাস্য উত্তর সেশনটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলে।
সেমিনারে শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষক, গবেষক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণ ছিল চোখে পড়ার মতো। আয়োজকগণ আশা প্রকাশ করেন, এমন আয়োজন ভবিষ্যতে প্রযুক্তি ও মানবিকতার সমন্বয়ে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলবে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে।